ভিসা করতে কি কি লাগে এবং কিভাবে করতে হয় জেনে নিন বিস্তারিত

ভিসা করতে কি কি লাগে সেটা সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে আপনি কোন দেশের নাগরিক এবং কোন দেশে আপনি যেতে ইচ্ছুক, কোন দেশের জন্য ভিসা করতে ইচ্ছুক, কোন কারণে সে দেশে যাবেন ইত্যাদি এ সকল বিষয়ের উপর। 

ভিসা-করতে-কি-কি-লাগে

যে কোন দেশে ভ্রমণ এর জন্য অবশ্যই কিছু আবশ্যিক কাগজপত্রের প্রয়োজন হয়ে থাকে। ভিসা করতে কি কি লাগে এবং এটি কিভাবে করতে হয় সে সম্পর্কে জানতে অবশ্যই এই আর্টিকেল টি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।

সূচিপত্রঃ ভিসা করতে কি কি লাগে এবং কিভাবে করতে হয়

ভিসা কত প্রকার ও কি কি

ভিসা সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই পুরোপুরি ধারণা নেই আজকে ভিসা কত প্রকার এবং কি কি সে সম্পর্কে আলোচনা করব। এক কথায় বলতে গেলে ভিজা হলো একটি অনুমোদন পত্র। যা একটি দেশ কোন বিদেশি নাগরিককে ওই দেশে যাওয়ার জন্য অনুমোদন দিয়ে থাকে ভিসার মাধ্যমে। ভিসা ছাড়া কোন দেশে অবস্থান করা অবৈধ। 

ভিসা প্রদানের জন্য  দুটি দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক চুক্তির ভিত্তিতেই থাকতে পারে। এই ক্ষেত্রে এ দুটি দেশ পরস্পরের জন্য ভিসা প্রথা স্থগিত রাখতে পারে যেমন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং বৃটেনের মধ্যে থাকায় এই দুই দেশের নাগরিক এক দেশ থেকে অন্য দেশে ভ্রমণ করতে পারে ভিসা ছাড়াই। ভিসা মূলত ১১ প্রকার এবং এগুলো হলো।

  • পর্যটক ভিসা
  • স্টুডেন্ট ভিসা
  • ব্যবসায়ী ভিসা
  • ওয়ার্ল্ড ভিসা
  • অফিসিয়াল ভিসা
  • ইনভেস্টার ভিসা
  • সাংবাদিক ভিসা
  • স্পাউস ভিসা
  • ওয়ার্ক ভিসা
  • ফ্যামিলি ভিসা
  • ইমিগ্রেন্ট ভিসা

এই সমস্ত বিষয়গুলোর এক একটা এক এক রকম ক্ষেত্র বিশেষ রয়েছে। এবং বাংলাদেশী পাসপোর্ট কারীদের সর্বোচ্চ 50 টি দেশে ভিসা ছাড়াই প্রবেশের অনুমতির কথা বলা থাকলেও আপাতত ৪২ টি দেশে অনুমতি রয়েছে।

ভিসা করতে কি কি লাগে

ভিসা করতে কি লাগে সেটা সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে আপনার উপরে আপনি কোন দেশে যেতে ইচ্ছুক এবং কোন কারনে যাবেন ইত্যাদি সকল বিষয়ের উপরে। নিম্নে এমন কিছু আবশ্যিক কাগজপত্রের তালিকা উল্লেখ করা হলো বিশ্বের কোন দেশের ভিসা আবেদন করতে আবশ্যিক লাগবে।

  • একটি বৈধ পাসপোর্ট কমপক্ষে সেটির মেয়াদ থাকতে হবে ৬ মাস
  • সাম্প্রতিক তোলা একটি পাসপোর্ট সাইজের ছবি
  • ভিসা আবেদন পত্র
  • হিসার উদ্দেশ্যরত প্রমাণপত্র
  • পুলিশের ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট
  • মেডিকেল সার্টিফিকেট
  • জন্ম নিবন্ধন সনদ
  • জাতীয় পরিচয় পত্র
  • ব্যাংক স্টেটমেন্ট (আর্থিক সাপোর্টের প্রমাণ পত্র)
  • করোনা টিকা সনদ (সব ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয় এটি)

ভিসা আবেদনের জন্য যেই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং ভিসা ধরন, আবেদনকারীর জাতীয়তা, এবং ভ্রমণের উদ্দেশ্যের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে। স্টুডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রে ভিসা স্কুল, কলেজের ভর্তি সনদ আবেদনকৃত প্রতিষ্ঠানের অফার letter, ভাষা দক্ষতার সার্টিফিকেট ইত্যাদি ডকুমেন্টস লাগতে পারে।

ভিসা কিভাবে করতে হয়

ভিসা করার জন্য যা যা করতে হয় বা ভিসা কিভাবে করতে হয় সে সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় ধাপগুলো নিম্নলিখিত অনুসরণ করতে হয় সাধারণভাবে ভিসা করার জন্য। তাই সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে নিচের আর্টিকেল গুলো পড়ার মাধ্যমে আপনি বুঝতে পারবেন সঠিকভাবে ভিসা কিভাবে করতে হয়।

দেশ নির্বাচন করাঃ
সর্বপ্রথম ভিসার জন্য আবেদন করতে হলে আপনাকে নির্বাচন করতে হবে আপনি কোন দেশে ভ্রমণ করবেন সেটি। এরপর পরবর্তী ধাপের জন্য অগ্রসর হতে হবে। ভিসা করার প্রক্রিয়া এবং কাগজপত্র দিয়ে সে উদ্দেশ্য ভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে।

ভিসার ক্যাটাগরি নির্বাচন করাঃ দেশ নির্বাচন করার পরে আপনাকে অবশ্যই ভিসার ক্যাটাগরি নির্বাচন করতে হবে। কেননা ভ্রমণের উদ্দেশ্য অনুযায়ী ভিসা ক্যাটাগরি নির্বাচন করতে হয়। ভ্রমণ, ব্যবসা, শিক্ষা, চিকিৎসা ইত্যাদি কারণে সাধারণত অস্থায়ী ভিসা করা হয়। যেমন স্টুডেন্ট ভিসা, মেডিকেল ভিসা, ভিজিট ভিসা ইত্যাদি। যদি আপনি স্থায়ীভাবে বসবাস করতে চান তাহলে অভিবাসী করতে হবে। আবার কাজের উদ্দেশ্য বা চাকরির উদ্দেশ্যের জন্য ওয়ার্ক পারমিট ভিসা করতে হয়।

আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশের সরকারি ছুটির তালিকা ২০২৫

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করাঃ এখানে আপনার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করতে হবে। এজন্য প্রথমে দেশ এবং ভিসা ক্যাটাগরি নির্বাচন করে নিতে হবে। ভিসা ক্যাটাগরি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আলাদা হয়ে থাকে। তবে কিছু আবশ্যিক কাগজপত্র রয়েছে যেগুলো সব ধরনের ভিসার জন্য প্রযোজ্য। যেমনঃ বৈধ পাসপোর্ট, ছবি, ভিসা আবেদন ফরম, আবেদন ফি ইত্যাদি। এজন্য আপনাকে জানতে হবে ভিসা করতে কি কি লাগে যেটা সম্পর্কে আমরা শুরুতে বিস্তারিত আলোচনা করেছি নিচে এই সম্পর্কে আরো জানতে পারবেন।

ভিসা আবেদন করাঃ ভিসা আবেদন অনলাইন এবং অফলাইন এই দুইটি উপায়ে করা যায়। যে দেশে আপনি যেতে চান সে দেশের সরকারের নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট ব্যবহার করে আপনি অনলাইনে ভিসা আবেদন সম্পন্ন করতে পারবেন। অফলাইনে দূতাবাসে গিয়ে ভিসা আবেদন সম্পন্ন করা হয়ে থাকে। এজন্য অবশ্যই সেই দেশের ভিসা আবেদন ফরম সংগ্রহ করতে হবে। এই ধাপটি সম্পন্ন করতে অবশ্যই অভিজ্ঞ লোকের শরণাপন্ন হবেন প্রয়োজনে বিশ্বস্ত এজেন্সির সহায়তা নিবেন।

সাক্ষাৎকার প্রদান করাঃ এমন কিছু দেশ রয়েছে যেখানে ভিসা অনুমোদন প্রদানের জন্য আগে সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে থাকে। এজন্য আপনাকে উক্ত দেশের দূতাবাসে গিয়ে সাক্ষাৎকার দেওয়া লাগতে পারে। সাক্ষাৎকারের সময় সাধারণত আপনার ভ্রমণের উদ্দেশ্য, পরিকল্পনা ও আর্থিক সামর্থ্য সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়ে থাকে।

কাঙ্খিত ভিসা সংগ্রহ করাঃ মূলত সাক্ষাৎকার প্রদানের পর ভিসা অনুমোদনের জন্য উপেক্ষা অপেক্ষা করতে হবে। অনুমোদন পেলে কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই কাঙ্ক্ষিত ভিসাটি সংগ্রহ করতে পারবেন। ভিসা প্রসেসিং সময় দেশ ভেদে ভিন্ন হতে পারে। আশা করছি আপনি ভিসা কিভাবে করতে হয় এবং ভিসা করতে কি কি লাগে সে সম্পর্কে জেনে উপকৃত হয়েছেন এবং বুঝতে পেরেছেন।

ভিসা বের করতে কতদিন সময় লাগে

ভিসা বের করার জন্য ঠিক কতদিন সময় লাগে তা সাধারণত নির্ভর করে আপনার দেশভিত্তিক ভ্রমণের ওপরে। যেমন বাংলাদেশের ভিসার প্রক্রিয়াকরণের সময় ভিসা ধরন এবং আবেদনের পরিমাণের ওপর নির্ভর করে সাধারণত একটি ভিসা প্রক্রিয়া করতে প্রায় পাঁচ থেকে সাত কার্যদিবস লাগে। এমনভাবে দেশ ভেদে ভিসা পাওয়ার সময় নির্ভর করে। 

আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশের পাসপোর্ট দিয়ে বিনা ভিসায় কোন কোন দেশ ভ্রমণ করা যায়

যেমন থাইল্যান্ডের টুরিস্ট ভিসা পেতে সর্বোচ্চ ৫-৭ দিন এবং টার্কির টুরিস্ট ভিসা ১৪-২১ দিন, দুবাইয়ের ভিসা ৩-৫ দিন, সিঙ্গাপুরের টুরিস্ট ভিসা ৩০ দিন, ভারতের টুরিস্ট ভিসা সাধারণত ৭-২১ দিন, উজবেকিস্তানের টুরিস্ট ভিসা ৫ দিন,‌ মিশরের ভিসা পেতে সর্বোচ্চ ৩০ দিন লাগতে পারে।

ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা করতে কি কি লাগে

বাংলাদেশ থেকে অন্যান্য দেশের টুরিস্ট ভিসা পাওয়া অনেক কঠিন। তবে বাংলাদেশ থেকে ভারতীয় ভ্রমণ ভিসা পাওয়া খুব একটা কঠিন না। কিন্তু এজন্য আপনার কিছু ধাপ অবলম্বন করতে হবে। ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা করতে কি কি লাগে তা জানতে হবে। নিম্নে সকল সম্পর্কে বিস্তারিত উল্লেখ করা হলো।

  • সর্বপ্রথম প্রয়োজন ভারতীয় টুরিস্ট ভিসার আবেদন পত্র
  • বৈধ পাসপোর্ট এবং পাসপোর্ট এর মেয়াদ সর্বনিম্ন ৬ মাস থাকা বাধ্যতামূলক
  • আবেদনকারীর সদ্য তোলা ২"×২" সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড এর ছবি।
  • ভোটার আইডি কার্ড বা জন্ম নিবন্ধন
  • বর্তমান ঠিকানার প্রমাণস্বরূপ গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ বিলের ফটোকপি
  • বিগত তিন মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট
  • পেশাগত প্রমাণের জন্য ট্রেড লাইসেন্স
  • পুরাতন পাসপোর্ট এর ফটোকপি যদি থাকে তাহলে

আপনি যদি ইন্ডিয়াতে ভ্রমণ করতে চান তাহলে অবশ্যই টুরিস্ট ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে বর্তমান সময়ে আপনি অনলাইনে ভারতীয় টুরিস্ট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন কেননা এখন অনলাইনে ভারতীয় টুরিস্ট ভিসার আবেদন করতে পারা যায় অনলাইনে আবেদন করার জন্য সরাসরি এই লিংকে  https://www.ivacbd.com/   ক্লিক করুন। ওই লিংকে যাওয়ার পর আপনার যাবতীয় তথ্য দিয়ে আবেদন ফরম ফিলাপ করতে হবে। আবেদন ফরম ফিলাপ করার পর সাবমিট বাটনে ক্লিক করতে হবে।

ভিসা করতে কি কি লাগে সে সম্পর্কিত কিছু প্রশ্নোত্তর

প্রশ্ন। বর্তমানে ভারতীয় ভিসার আবেদন ফি কত?

উত্তর। ৮০০ টাকা।

প্রশ্ন। ভিসা কত প্রকার?

উত্তর। ১১।

প্রশ্ন। ভিজিটর ভিসা কি?

উত্তর। একটি ভিজিটর ভিসা টুরিস্ট ভিসার অনুরূপ যেটা এটি পর্যটকদের পর্যটন উদ্দেশ্যে অন্য দেশে প্রবেশ করতে দেয়।

প্রশ্ন। বাংলাদেশের পাসপোর্ট কত প্রকার?

উত্তর।
তিন প্রকার।

প্রশ্ন। পাসপোর্ট করতে কতদিন সময় লাগে?

উত্তর। নিয়মিত ১৫ থেকে ২১ দিন জরুরী ৫-৭ দিন এবং অতি জরুরী পাসপোর্ট ২ কর্ম দিবসের মধ্যে দেওয়া হয়।

প্রশ্ন। পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে কত টাকা লাগে?

উত্তর। পাসপোর্ট রিসোর জন্য ৩০০০ টাকা দিতে হয়।

প্রশ্ন। বাংলাদেশের পাসপোর্ট এর অবস্থান কততম?

উত্তর। ২০২৪ সালে বাংলাদেশের পাসপোর্ট এর অবস্থান ৯৭ তম।

লেখক এর শেষ কথা

ভিসা কত প্রকার ও কি কি, ভিসা করতে কি লাগে, ভিসা কিভাবে করতে হয়, ভিসা বের করতে কতদিন সময় লাগে, ভিজিট ভিসা করতে কি কি লাগে এবং বাংলাদেশের ভিসা পেতে কত সময় লাগে সে সম্পর্কিত সকল প্রশ্নের উত্তর এই পোস্টটির মধ্যে দেওয়া হয়েছে। আশা করছি আপনি আমাদের পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে উপকৃত হয়েছেন। এমন আরও তথ্য সম্পর্কিত পোস্ট করতে আমাদের ওয়েবসাইটের হোম পেজে ভিজিট করুন ধন্যবাদ।


 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অমৃতা ব্লগারের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url