শীতকালে শুষ্ক ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখার ১০টি কার্যকারি উপায়
শীতকালে আমাদের খুব কম তৃষ্ণা লাগে এবং আমরা সেই কারণে খুব কম জল পান করি। যার
ফলে আমাদের শরীর হাইড্রেট থাকে না এবং ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। ত্বকে আদ্রতার অভাব
শীতকালে ঠান্ডা বাতাসের জন্য ও আমাদের ত্বকের স্বাভাবিক আদ্রতা হারিয়ে
যায়।
যার কারণে আমাদের ত্বক শুষ্ক হতে শুরু করে এবং শুষ্ক হওয়ার কারণে চুলকানি শুরু
হয়। আজকে এই পোস্টটির মাধ্যমে আমরা শীতকালে শুষ্ক ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখার
১০টি কার্যকরী উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
সূচিপত্রঃ শীতকালে শুষ্ক ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখার ১০টি কার্যকারি উপায়
- শীতকালে ত্বক শুষ্ক হয় কেন
- শীতকালে ত্বকের খোসা পড়ে কেন
- কোন ভিটামিনের অভাবে ত্বক শুষ্ক হয়
- শীতকালে হাত পা শুষ্ক হওয়ার কারণ
- হাত পা নরম করার উপায়
- শীতকালে রুক্ষ ত্বকের জন্য ক্রিম
- শুষ্ক ত্বকের জন্য ময়শ্চারাইজার
- শীতকালে শুষ্ক ত্বকের জন্য নাইট ক্রিম
- শুষ্ক ত্বকের ছেলেদের জন্য ক্রিম
- শীতকালে ত্বকের শুষ্কতা থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায়
শীতকালে ত্বক শুষ্ক হয় কেন
শীতকালে আমাদের অনেকেরই ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। কারণ শুষ্ক প্রকৃতি শীতকালের বাইরে
ঠান্ডা বাতাস বয়, শীতকালে আমাদের ত্বক ও হয়ে ওঠে তখন শুষ্ক। শীতকালে তাপমাত্রা
অনেকটাই কম থাকে আবহাওয়া থাকে শুষ্ক আর এই সময়টাই দেখা দেয় সমস্যাগুলো অন্যতম
একটি শুষ্ক ত্বক হয়ে যাওয়া। এই সময়টায় অনেকের উজ্জ্বল ত্বক গ্রীষ্মের রোদের
মতো শুকনো খিটখিটে ত্বকে রূপান্তরিত হয়। আর এমন ক্ষেত্রে ত্বক শুষ্ক হয়ে
যাওয়ার পাশাপাশি তাদের চুলকানি এবং লাল আভা দেখা দিতে পারে। শীতকালে যে পাঁচ
কারণে ত্বক হয়ে যেতে পারে শুষ্ক।
গরম পানি দিয়ে গোসল করলেঃ
শীতকালে আমরা অনেকেই গরম পানি দিয়ে গোসল করে থাকি তবে এটি আরামদায়ক হলেও এটির
খারাপ দিক রয়েছে। আর সেটা হচ্ছে অত্যাধিক গরম পানি, যেটা আমাদের ত্বকের ক্ষতি
করতে পারে এবং শীতকালে ত্বক শুষ্ক রাখতে পারে এছাড়া এটি আমাদের ত্বকে লাল ফ্লাগি
এবং সংবেদনশীল করে তুলতে পারে। তাই অতিরিক্ত পরিমাণে গরম পানি দিয়ে গোসল করা
একদমই উচিত নয়।
অতিরিক্ত ত্বক ধোয়ার কারণেঃ আপনার মুখ
অতিরিক্ত ধোয়ার কারণে ত্বকের প্রাকৃতিক ময়শ্চারাইজিং ফ্যাক্টর হারিয়ে যায়
আরেকটি পরবর্তী ৬ ঘন্টা ত্বকে আর ফিরে আসে না। আপনি যদি ত্বক ধোয়ার পরে
মশ্চারাইজার না করেন তাহলে আপনার ত্বক তার সব প্রাকৃতিক তেল হারিয়ে ফেলতে পারে
যা এটিকে টানটানো শুষ্ক করে তুলে।
পর্যাপ্ত পানির অভাবেঃ
শীতকালে এমনিতেই আমরা অনেক কম পরিমাণে পানি পান করে থাকি। কিন্তু এই কারণে আমাদের
ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে পারে ত্বকের সঠিক হাইড্রেশন না হলে ত্বকের শুষ্কতা বেশি
দেখা দিতে পারে এবং ত্বক ক্রেক করতে থাকে তাই ত্বকের সুরক্ষার জন্য হলেও পর্যাপ্ত
পরিমাণে পানি পান করতে হবে।
আরও পড়ুনঃ ত্বকের যত্নে অলিভ অয়েলের ১০টি গুনাগুণ
ত্বকের রাসায়নিক পদার্থের প্রভাবেঃ আমরা সবাই ত্বকের ময়লা দূর করতে
ত্বকের । এক্সফলিয়েট সহ আরো অনেক কিছু ত্বকে ব্যবহার করে থাকি তবে অতিরিক্ত
পরিমাণে এগুলো ব্যবহার করার ফলে আমাদের ত্বকের আদ্রতা হারিয়ে যেতে পারে। ত্বকে
রুক্ষতা দেখা দিতে পারে। তাই অতিরিক্ত পরিমানে এক্সফ্লিয়েট সহ অন্য কোন কিছু
ব্যবহার করা ঠিক না।
ময়শ্চারাইজিং এর অভাবেঃ শীতকালে আমাদের
ত্বক আদ্র থাকার কারণে ত্বকের তেল অনেক সময় কমে যেতে পারে। তাই এই সময় সঠিক
ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করা আমাদের ত্বকের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এটি
ত্বকের প্রাকৃতিক তেলকে লক করতে সাহায্য করে ও ত্বকের শুষ্কতা দূর করতেও সাহায্য
করে।
শীতকালে ত্বকের খোসা পড়ে কেন
গ্রীষ্মের তুলনায় শীতকালে ত্বকের খোসা বেশি উঠার পিছনেও কয়েকটি মূল কারণ
রয়েছে। এগুলো এখানে উল্লেখ করা হলো।
১. শীতকালে শুষ্ক আবহাওয়া যথা বাতাস বেশি হয় যে কারণে আমাদের ত্বকে
রুক্ষতা দেখা দিতে পারে এবং আমাদের ত্বকের খোসা উঠে থাকে।
২.
আমাদের প্রত্যেকেরই ত্বকে একটি প্রাকৃতিক তেল থাকে। শীতকালে সেই তেল কমে যাওয়ার
ফলেও আমাদের ত্বকে শুষ্কতা দেখা দিতে পারে এবং ত্বকের খোসা উঠতে পারে।
৩.
শীতকালে শুষ্কতার জন্য আমাদের ত্বকের ময়শ্চারাইজার কমে গেলেও আমাদের ত্বকের খোসা
উঠে থাকে সে ক্ষেত্রে আমরা ভালো মশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারি। এতে আমাদের
ত্বকের খোসা উঠা থেকে বিরত থাকবে।
৪. শীতকালে টেম্প ফলসের
কারণে বাষ্পি ভবন প্রক্রিয়া কমে যায়। তাই বাতাস আমাদের ত্বকে হাইড্রেট করার
জন্য খুব বেশি হাইড্রেট নয়। তখন আমাদের ত্বক শীতকালে শুষ্ক হয় এবং শুষ্কতার
কারণে খোসা ছাড়ে।
কোন ভিটামিনের অভাবে ত্বক শুষ্ক হয়
শুধু শীতকালেই নয়, ভিটামিন বা খনিজ ঘাটটি ত্বককে সুস্থ রাখতে পুষ্টির প্রয়োজন। আপনি যদি পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি ভিটামিন এ নিয়াসিন জিং বা আয়রন না পান তবে আপনি অতিরিক্ত শুষ্ক ত্বক বিকাশ করতে পারেন। সূর্যলোক সরাসরি সূর্যলোকের কারণে যেকোন ঋতুতেই শুষ্ক ত্বক হতে পারে কারণ সূর্যের উত্তাপে ত্বকের পানি ও নিঃসরিত তেল শুকিয়ে যায়।
রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহারের কারণে ত্বকের ময়লা পরিষ্কার করার সময় ত্বকের পানি ও তেল শুষে নাই এগুলো যত বেশি ক্ষারীয় হয় তত বেশি তেল পানি শুষে নেয়। শুষ্ক ত্বকের জন্য ভিটামিন ডি খুবই প্রয়োজন। ভিটামিন ডি আপনার ত্বকের প্রাকৃতিক বাধার অখন্ডতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
যা ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষার প্রথম লাইন হিসেবে কাজ করে থাকে। আপনি যদি পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি পেতে ব্যর্থ হন তবে আপনার ত্বক শীঘ্রই একজিমা বা সোরিয়াসিসে আক্রান্ত হতে পারে উভয়ই শুষ্ক ত্বকের সাথে যুক্ত।
ভিটামিন ডি এর অভাব আপনার গায়ের রং কে নিস্তেজ করে তুলতে পারে যা বিদ্যমান
যেকোনো পিগমেন্টেশন বা ডার্ক সার্কেলকে আরো বাড়িয়ে দেয়। এবং তাদের নিরাময়কে
বাধা দেয় এর কারণ হলো ভিটামিন ডি সঠিকভাবে পুনর্জন্মনের জন্য ত্বকের কোষগুলোর
প্রয়োজন।
শীতকালে হাত-পা শুষ্ক হওয়ার কারণ
শীতকালে অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে আমাদের ত্বক দ্রুত আর্দ্রতা হারায় ফলে অনেকেরই পা ফাটা ফোস্ট বাইট নোখ ওঠার মত সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। যা যে কারোরই সামগ্রিক সুস্থতার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। শীতকালে অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে ত্বক দ্রুত আদ্রতা হারায়। শীতকালে সাধারণত তাপমাত্রা কম থাকে তাপমাত্রা কম থাকার কারণে বাতাসে জলীয় বাষ্প আপেক্ষিক ভাবে কমে যায়।
আরও পড়ুনঃ ড্রাগন ফলের খোসার উপকারিতা
যে কারণে আমাদের দেহের বহির্ভাগের আদ্রতা দূরত্ব বাতাসের সাথে মিশে যায় তাই হাত পা শুষ্ক হয়ে ফেটে যায়। আবার শীতে ময়েশ্চারাইজার এর অভাবে হাত পা রুক্ষ হয়ে পড়তে পারে ফলে পা ফাটার সমস্যা দেখা দেয়। এতে সুন্দর সাজ, দারুন হেয়ার স্টাইল, আর দামি কাপড় এ ফাটা গোড়ালি দেখা গেলে সবই মাটি হয়ে যায় তাই পায়ের বিশেষ যত্ন অবশ্যই আমাদেরকে নিতে হবে।
আবার এমনও হয় যে কখনো কখনো আমাদের হাত পা ফাটার জন্য ভিটামিনের অভাব পরে বিশেষত
ভিটামিন বি ভিটামিন সি ও ভিটামিন ডি ত্বকের যত্নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা পালন করে। তাই এই ভিটামিন গুলির অভাবে ত্বকে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়
যার মধ্যে অন্যতম পায়ের গোড়ালি ফেটে যাওয়া।
শীতকালে হাত পা নরম রাখার উপায়
শীতকালে হাত ফাটা চামড়া-কুঁচকে যাওয়া ত্বক খসখসে হয়ে যাওয়া ত্বক বিপন্ন হয়ে
যাওয়ার মতো নানা ধরনের সমস্যা দেখা যায় যার ফলে হাত দেখতেও যেমন খারাপ লাগে
তেমনি হাতেরও নানা সমস্যা দেখা যায়। হাত পা নরম রাখার কয়েকটি ঘরোয়া উপায়
এখানে উল্লেখ করা।
১. শীতকালে হাতের যত্নে গ্লিসারিন অনেক
বেশি উপকারী। গ্লিসারিন এর সম্পর্কে আমরা সবাই জানি। তিন চামচ চালের গুড়ার
সাথে দুই চামচ গ্লিসারিন এবং মধু দিয়ে প্যাক বানানো যায়। এবং ১৫ মিনিট হাতে
রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে। এটি ব্যবহার করার পরে অন্তত দুই থেকে তিন ঘন্টা কোনরকম
সাবান ব্যবহার করা যাবে না। আবার গ্লিসারিন এর সাথে গোলাপ জল মিশিয়ে কটন উল
সওয়াব দিয়ে তা দুই হাতে ঘষাও যেতে পারে এতে চমৎকারভাবে হাত এবং পায়ের ত্বক
পরিষ্কার হবে।
২. হাত-পায়ের শুষ্কতা দূর করতে মসুরের ডাল ও
খুবই কার্যকরী। তিন চামচ মুসুরের ডাল বেটে তার সঙ্গে দুই চামচ আপেল সাইডার
ভিনেগার ও ডিমের সাদা অংশ মিশিয়ে স্ক্রাব বানানো যায়। স্ক্রাবটি ৩০ মিনিট হাতে
লাগিয়ে রাখার পরে শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতেও
হাত-পায়ের শুষ্কতা দূর হবে।
৩. আবার অতিরিক্ত শুষ্কতা হলে
হাত-পায়ে নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল লাগিয়ে রেখে দিতে হবে সারারাত তবে ঘুমানোর
আগে অবশ্যই গ্লাভস পড়ে নিতে হবে হাতে এবং পায়ে। এতেও অনেক উপকার পাওয়া
যায়।
৪. হাত পা নরম এবং সুন্দর রাখতে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ
বিষয় হচ্ছে সানস্ক্রিন লাগানো। বাইরে যাওয়ার আগে সানস্ক্রিন লাগানোর সময়
অনেকেই হাতে এবং পায়ে সানস্ক্রিন লাগাতে ভুলে যান তার ফলে হাত এবং পায়ের ত্বক
পুড়ে যায়। মুখ ও ঘাড়ের পাশাপাশি হাত এবং পায়ে সানস্ক্রিন লাগাতে হবে। এতে
আমাদের হাত এবং পা উভয় নরম থাকবে।
শীতকালে শুষ্ক ত্বকের জন্য ক্রিম
শীতকালে শুষ্ক ত্বকে জন্য ত্বকের ড্রাইনেস এড়াতে আপনার স্কিনের জন্য উপযুক্ত একটি ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। CereVe ডেইলি মশ্চারাইজিং লোশন বা ক্রিম হায়ালুরোনিক এসিড এবং সিরামাইড দিয়ে তৈরি। এটি যে কারো জন্য একটি নির্ভরযোগ্য বিকল্প আপনার ঠান্ডা শুষ্ক মাসে আদ্রতা বাড়ানোর প্রয়োজন হোক বা একজিমা প্রবণ যেহেতু এটিতে ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশনের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে।
সেই ক্ষেত্রে এই ক্রিমটি ব্যবহার করতে পারবেন। এছাড়াও আপনি
Himalaya herbal clear complexion ক্রিমটি
ব্যবহার করতে পারেন যা অত্যন্ত কার্যকারী তাছাড়াও প্রতিনিয়ত ত্বক ফর্সা ও
উজ্জ্বল করার জন্য ওলে হোয়াইট রেসিডেন্টস ক্রিমটি ব্যবহার করতে পারেন। এগুলো
বাদেও আরো কিছু ভালো মানের ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন তার কিছু উদাহরণ ও তালিকা
নিচে দেওয়া হল।
- 1. Neutrogena
- 2. Simple
- 3. Nivea
- 4. Revuele
- 5. Himalayan
- 6. Aveeno
- 7. Vaseline
শুষ্ক ত্বক প্রতিরোধ সুরক্ষা এবং পুষ্টিতে সাহায্য করার জন্য ২৪ ঘন্টা
ময়শ্চারাইজেশন উপভোগ করতে এই সকল ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। এই ক্রিম গুলো ডেইলি
ময়শ্চারাইজিং ক্রিমি তেল শুষ্ক সংবেদনশীল ত্বকের জন্য উপযুক্ত তাছাড়াও এই
ক্রিমগুলো মুখের পাশাপাশি শরীর ও ব্যবহার করতে পারবেন।
শুষ্ক ত্বকের জন্য মশ্চারাইজার
শুষ্ক ত্বকের জন্য খুবই প্রয়োজন একটি জিনিস হল ময়শ্চারাইজার। আপনাদের অনেকেরই প্রশ্ন থাকতে পারে কোন ধরনের মশ্চারাইজার ব্যবহার করবেন আপনারা কারণ সকলের ত্বক একরকম না। সেই ক্ষেত্রে শুষ্ক ত্বকের জন্য অয়েল বেস্ট মশ্চারাইজার সব থেকে ভালো। কারণ শুষ্ক ত্বকে আদ্রতা প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি।
তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ওয়াটার বেস্ট বা জেল জাতীয় ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত। এগুলোতে তেলের পরিমাণ কম তাই তৈলাক্ত ত্বকের জন্য খুবই মানানসই হয়। শুষ্ক ত্বকের জন্য হাই্লরনিক এসিড আর্দ্রতা ধরে রাখার বৈশিষ্ট্যের জন্য বিখ্যাত। হায়ালোরনিক এসিড ত্বকে ওজন কম ওজন না করে হাইড্রেটেট এবং কোমল রাখে।
আরও পড়ুনঃ কেনো মধু খাবেন? মধুর উপকারিতা ও অপকারিতা
এটি শুষ্কতা বা আটকে থাকা ছিদ্র গুলির মতো সংমিশ্রণ ত্বকের লক্ষণগুলোকে উন্নত না
করে ত্বককে পর্যাপ্ত ভাবে পুষ্টি দিয়ে থাকে। ময়শ্চারাইজার শুষ্ক ত্বকের
অন্তর্নিহিত ডার্মাটোস গুলি কাটিয়ে উঠতে কার্যকর ভাবে কাজ করে ত্বকের মসৃণতা
বজায় রেখে শুষ্ক ত্বকের চক্রকে বাধা দেয়।
ত্বকের জন্য কতটুকু মশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিতঃ
আপনি যদি আপনার ত্বকের ধরুন অনুসারে ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করেন তবে আপনার পুরো
মুখের জন্য একটি নিকেল আকারের পরিমাণ যথেষ্ট হওয়া উচিত। আপনি যদি খুব বেশি
পরিমাণের মশ্চারাইজার ব্যবহার করে থাকেন তবে আপনার ত্বক চকচক করবে এবং ব্রেক আউট
হতে পারে। এটি আপনার ত্বকে ভারী বোধ করাতে পারে। এবং আপনার মেকআপ করা কঠিন করে
তুলতে পারে তাই মশ্চারাইজার আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী স্বল্প পরিমাণে ব্যবহার করা
উচিত।
শুষ্ক ত্বকের জন্য কোন মশ্চারাইজার ভালোঃ আপনার সুস্থ
ত্বকের জন্য সঠিক ময়শ্চারাইজার নির্বাচন করুন সঠিক ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করে
আরমারের সেই সব গুরুত্বপূর্ণ স্তরটি কে হাইটেক করে আপনার ত্বককে সুস্থ রাখতে পারে
যেমনঃ
- CereVe®
- Aveeno®
- Avene®
- Eucerin®
- Cetaphil®
সকল ব্র্যান্ডের মশ্চারাইজার গুলো শুষ্ক ত্বকের জন্য ডক্টররা সবচেয়ে বেশি
সুপারিশ করে থাকে।
। শীতকালে অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে ত্বক দ্রুত আদ্রতা
হারায়। শীতকালে সাধারণত তাপমাত্রা কম থাকে তাপমাত্রা কম থাকার কারণে বাতাসে
জলীয় বাষ্প আপেক্ষিক ভাবে কমে যায় যে কারণে আমাদের দেহের বহির্ভাগের আদ্রতা
দূরত্ব বাতাসের সাথে মিশে যায় তাই হাত পা শুষ্ক হয়ে ফেটে যায়। আবার শীতে
ময়েশ্চারাইজার এর অভাবে হাত পা রুক্ষ হয়ে পড়তে পারে ফলে পা ফাটার সমস্যা দেখা
দেয়।
এতে সুন্দর সাজ, দারুন হেয়ার স্টাইল, আর দামি কাপড় এ ফাটা গোড়ালি দেখা গেলে
সবই মাটি হয়ে যায় তাই পায়ের বিশেষ যত্ন অবশ্যই আমাদেরকে নিতে হবে। আবার এমনও
হয় যে কখনো কখনো আমাদের হাত পা ফাটার জন্য ভিটামিনের অভাব পরে বিশেষত ভিটামিন
বি ভিটামিন সি ও ভিটামিন ডি ত্বকের যত্নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন
করে। তাই এই ভিটামিন গুলির অভাবে ত্বকে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয় যার মধ্যে
অন্যতম পায়ের গোড়ালি ফেটে যাওয়া।
শীতকালে হাত পা নরম রাখার উপায়
শীতকালে হাত ফাটা চামড়া-কুঁচকে যাওয়া ত্বক খসখসে হয়ে যাওয়া ত্বক বিপন্ন হয়ে
যাওয়ার মতো নানা ধরনের সমস্যা দেখা যায় যার ফলে হাত দেখতেও যেমন খারাপ লাগে
তেমনি হাতেরও নানা সমস্যা দেখা যায়। হাত পা নরম রাখার কয়েকটি ঘরোয়া উপায়
এখানে উল্লেখ করা।
১. শীতকালে হাতের যত্নে গ্লিসারিন অনেক
বেশি উপকারী। গ্লিসারিন এর সম্পর্কে আমরা সবাই জানি। তিন চামচ চালের গুড়ার
সাথে দুই চামচ গ্লিসারিন এবং মধু দিয়ে প্যাক বানানো যায়। এবং ১৫ মিনিট হাতে
রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে। এটি ব্যবহার করার পরে অন্তত দুই থেকে তিন ঘন্টা কোনরকম
সাবান ব্যবহার করা যাবে না। আবার গ্লিসারিন এর সাথে গোলাপ জল মিশিয়ে কটন উল
সওয়াব দিয়ে তা দুই হাতে ঘষাও যেতে পারে এতে চমৎকারভাবে হাত এবং পায়ের ত্বক
পরিষ্কার হবে।
২. হাত-পায়ের শুষ্কতা দূর করতে মসুরের ডাল ও
খুবই কার্যকরী। তিন চামচ মুসুরের ডাল বেটে তার সঙ্গে দুই চামচ আপেল সাইডার
ভিনেগার ও ডিমের সাদা অংশ মিশিয়ে স্ক্রাব বানানো যায়। স্ক্রাবটি ৩০ মিনিট হাতে
লাগিয়ে রাখার পরে শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতেও
হাত-পায়ের শুষ্কতা দূর হবে।
৩. আবার অতিরিক্ত শুষ্কতা হলে
হাত-পায়ে নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল লাগিয়ে রেখে দিতে হবে সারারাত তবে ঘুমানোর
আগে অবশ্যই গ্লাভস পড়ে নিতে হবে হাতে এবং পায়ে। এতেও অনেক উপকার পাওয়া
যায়।
৪. হাত পা নরম এবং সুন্দর রাখতে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ
বিষয় হচ্ছে সানস্ক্রিন লাগানো। বাইরে যাওয়ার আগে সানস্ক্রিন লাগানোর সময়
অনেকেই হাতে এবং পায়ে সানস্ক্রিন লাগাতে ভুলে যান তার ফলে হাত এবং পায়ের ত্বক
পুড়ে যায়। মুখ ও ঘাড়ের পাশাপাশি হাত এবং পায়ে সানস্ক্রিন লাগাতে হবে। এতে
আমাদের হাত এবং পা উভয় নরম থাকবে।
শীতকালে শুষ্ক ত্বকের জন্য নাইট ক্রিম
শুষ্ক ও রুক্ষ ত্বকে মশ্চারাইজার যুক্ত নাইট ক্রিম গুলো লাগানো উচিত এ ধরনের ত্বকে কোলাজেন কম উৎপাদিত হতে পারে শুষ্ক ত্বকে মধুসিয়া বাটার কোকোয়া বাটার এসেন্টিয়াল অয়েল গ্লিসারিন ইত্যাদি যুক্ত নাইট ক্রিম ব্যবহার করার প্রয়োজন। নাইট ক্রিম শুষ্কতা মোকাবেলায় সহায়তা করে এবং পরের দিন সকালে আপনার ত্বককে মোটা এবং কোমল বোধ করে সেলুলার মেরামত একটি নাইট ক্রিম প্রয়োজনীয় পুষ্টি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সরবরাহ করে।
যা সেলুলার মেরামত এবং পুনরজন্মকে সমর্থন করে এর অর্থ সময়ের সাথে সাথে মসলিন স্বাস্থ্যকর চেহারা তব আপনি পেতে পারেন। নাইট ক্রিম ব্যবহার করার নিয়ম অনেকেই দ্বিধাদ্বন্ত্রই যে এটি প্রতিদিন ব্যবহার করা যায় কিনা? হ্যাঁ আপনার দৈনন্দিন স্কিন কেয়ার রুটিনে নাইট ক্রিম অন্তর্ভুক্ত করা সর্বোত্তম ফলাফলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
রাত্রিকালীন প্রয়োগ ত্বকের প্রাকৃতিক মেরামতের প্রক্রিয়াগুলিকে সমর্থন করে।
ক্রিমটির সুবিধাগুলির সর্বাধিক গড়ে তুলে সুস্থ-পুষ্ট ত্বক অর্জন বজায় রাখার
জন্য ধারাবাহিকতা বা চাবিকাঠি হল নাইট ক্রিম। তবে সেই ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই
একটি ভালো মানের বা ভালো ব্র্যান্ডের নাইট ক্রিম ব্যবহার করতে হবে প্রতিনিয়ত।
শীতকালে শুষ্ক ত্বকে ছেলেদের জন্য ক্রিম
শীতকালে শুধু মেয়েদের নয়, ছেলেদেরও ত্বক শুষ্ক এবং রুক্ষ হয়ে যায় সেই ক্ষেত্রে মেয়েদের পাশাপাশি ছেলেদেরও প্রয়োজন নিজেকে ত্বকের যত্ন নেওয়াটা। শীত আসলে আমাদের ত্বকের অনেক সমস্যা শুরু হয় কারণ শীতের সময় আবহাওয়া শুষ্ক হয়ে যায় যার ফলে হাত-পা ফাটে এবং ত্বক শুষ্ক হয়ে যায় যে কারণে নিজেকে অনেক খারাপ লাগে দেখতে শীতের সময় ছেলেদের ত্বকের অনেক ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।
শুষ্ক ত্বক থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রসাধনী পণ্য যেমন ক্রিম লোশন ময়শ্চারাইজার বাজারে পাওয়া যায় এগুলো জেনে বুঝে তবে ব্যবহার করা উচিত সবার ক্ষেত্রে। এছাড়াও আরো একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে শীতের সময় অতিরিক্ত গরম পানিতে গোসল করা যাবেনা। বারবার বেশি গরম পানিতে গোসল করার ফলে হিতে বিপরীত হতে পারে খুব বেশি গরম পানি ব্যবহার করলে।
আরও পড়ুনঃ ত্বকের যত্নে ভিটামিন সি সিরাম
অল্প সময় নিয়ে কুসুম গরম পানিতে গোসল করতে হবে বেশিক্ষণ গরম পানিতে গোসলের ফলে
ত্বক আরো বেশি শুষ্ক হয়ে পড়ে। তাছাড়া নিয়মিত গরম পানিতে গোসল করা ত্বকের জন্য
ক্ষতিকর ।
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা: ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখতে মেয়েদের
পাশাপাশি ছেলেরাও মশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন শীতে ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে
বেশি মশ্চারাইজার দরকার হয়।
ময়েশ্চারাইজার সহ সানস্ক্রিন, ক্রিম, লোশন সহ এমন আরও অনেক কিছু ব্যবহার করে
আপনি আপনার ত্বক সুন্দর রাখতে পারেন। তবে এটার বিকল্প হিসেবে আপনি পর্যাপ্ত
পরিমাণে পানি এবং খাদ্যাভ্যাস এর মাধ্যমেও আপনার ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখতে
পারেন।
শীতকালে ত্বকের শুষ্কতা থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায়
ইতিমধ্যে আমরা সবাই জেনেছি শীতকালে আমাদের ত্বক অনেক বেশি শুষ্ক হয়ে থাকে এবং
এটি থেকে রক্ষা পেতে আমাদের ত্বকের যত্ন নিতে আমরা যা যা করব তা এখানে উল্লেখ করা
হলো।
- গরম পানি দিয়ে গোসল পরিহার
- ভালো মানের মশ্চারাইজার এর ব্যবহার
- ত্বকের এক্সফলিয়েট করা
- ভিটামিন সি এবং রেটিনল সিরাম ব্যবহার করা
- বিশেষ ক্লিনজার ব্যবহার করা
- যে কোন ফলের ফেসপ্যাক ব্যবহার করা
- নারিকেল তেল ব্যবহার করা
- ঠান্ডা দুধ দিয়েও ফেসপ্যাক ব্যবহার করা
উপরে উল্লেখিত এ সকল উপায় দ্বারা আপনি শুষ্ক ত্বক থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
এইগুলো ব্যবহার না করে এর বিকল্প হিসেবে কোন উপায় পেতে চান তাহলে আপনাকে
পরিবর্তন আনতে হবে আপনার খাদ্যাভাসের মাধ্যমে যেমন আপনাকে শীতকালে পর্যাপ্ত
পরিমাণে পানি পান করতে হবে। এই সকল উপায় মেনে চললে শীতকালে শুষ্ক ত্বক থেকে
মুক্তি পেতে পারবেন।
লেখক এর শেষ কথাঃ শীতকালে শুষ্ক ত্বক থেকে রক্ষা পাওয়ার সম্পর্কে
শীতকালে আমাদের অনেকেরই ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। কারণ শুষ্ক প্রকৃতি শীতকালের বাইরে ঠান্ডা বাতাস বয়, শীতকালে আমাদের ত্বক ও হয়ে ওঠে তখন শুষ্ক। শীতকালে তাপমাত্রা অনেকটাই কম থাকে আবহাওয়া থাকে শুষ্ক আর এই সময়টাই দেখা দেয় সমস্যাগুলো অন্যতম একটি শুষ্ক ত্বক হয়ে যাওয়া।শীতকালে আমাদের ত্বক অনেক বেশি শুষ্ক ও আর্দ্র হয়ে যায়।
এবং সেখান থেকে আমরা কিভাবে মুক্তি পেতে পারি এবং আমাদের ত্বকের যত্ন নিতে পারি
সে সকল উপায় উপরের পোস্টের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। আশা করছি আমাদের পোস্টটি
পড়ার মাধ্যমে আপনি উপকৃত হয়েছেন। লাইফ স্টাইল সম্পর্কিত এমন আরো পোস্ট পড়তে
আমাদের ওয়েবসাইটের হোমপেজে এ ভিজিট করুন।
অমৃতা ব্লগারের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url