চিয়া সিড কেন খাবেন জেনে নিন এর ৬টি গুনাগুন সম্পর্কে

স্বাস্থ্যের জন্য চিয়া সিডকে সুপার ফুড বলা হয়। কারণ চিয়া সিড প্রাচীনকাল থেকে খাবার প্রচলন রয়েছে। দুধ ডিম এবং ফলমূলের থেকেও চিয়া সিডে বেশি প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম রয়েছে। এছাড়াও এই বীজে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফসফরাস এর মত গুরুত্বপূর্ণ খনিজ রয়েছে। 

যা আপনার হাড়ের জন্য ভালো। চিয়া বীজে প্রোটিন রয়েছে যা আপনার পেশীগুলোকে বৃদ্ধি করতে এবং নিজেদের মেরামত করে। নির্দিষ্ট খাদ্য তালিকাগত বিধি নিষেধ সহ লোকেদের জন্য একটি ভালো বিকল্প এটি।

সূচিপত্রঃ চিয়া সিড কেন খাবেন জেনে নিন এর গুনাগুন সম্পর্কে

চিয়া সিড খেলে কি হয়

চিয়া সিডের ম্যাগনেসিয়াম আর ফসফরাস  হারের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই কার্যকরী। হাড়ছাড়াও অপটিমাল মাসল ও স্নায়ু ভালো রাখে চিয়া সিড। সকালে কার্বোহাইড্রেট বা মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়ার পর তা দ্রুত রক্তের সঙ্গে গ্লুকোজ আকারে মিশে যাবে। ফলে আপনার "সুগার স্পাইক" (হুট করে রক্ত চিনির মাত্রা বেড়ে যাওয়া) হবে। চিয়া সিড সাদা ও কালো রংয়ের হয়ে থাকে এবং এটি দেখতে তিলের মত ছোট আকারের হয়। চিয়া সিডে রয়েছে ওমেগা-৩ ফাটি অ্যাসিড। 

১. হাড়ের সমস্যায় ভুগছেন যারা তাদের জন্য নিয়মিত চিয়া সিড খাওয়া খুবই প্রয়োজনীয়‌। কেননা এতে রয়েছে ক্যালসিয়াম ফসফরাস এবং ম্যাঙ্গানিজ যা হার শক্তিশালী রাখতে সাহায্য করে থাকে। 

২. চিয়া সিড প্রচুর পরিমাণে পানি শোষণ করে এবং পেট পরিপূর্ণ করে তোলে ফলে কম ক্যালরি খাওয়া হয়।

৩. চিয়া সিডে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা বয়স সম্পর্কিত বলিরেখা কমাতে অনেক সাহায্য করে। এর অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য ব্রণ নিরাময় কাজ করে। এবং ওমেগা ৩ ত্বককে সবসময় হাইড্রেটেড রাখে।

৪. শরীরের ইনসুলিনের মাত্রা ঠিক রাখতেও চিয়া সিড অনেক সহায়তা করে। বিশেষ করে খাবারের পরে রক্তে শর্করার মাত্রার স্থিতিশীল করে। 

৫. চিয়া সিডে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। যা হজমে অনেক বেশি সহায়ক। এতে করে এর মধ্যে থাকা দ্রবণীয় ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করে। 

৬. হৃদরোগের ঝুঁকি এবং ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমাতে অনেক বেশি সহায়তা করে চিয়া সিড।
চিয়ার যে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিগুণ রয়েছে তা নিয়ে কোনরকম সন্দেহ নেই। চিয়া সিটে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে। তাই পানিতে ভেজানো চিয়া সিড খেলে অনেকক্ষণ পর্যন্ত পেট ভর্তি থাকে এবং বারবার খাওয়ার প্রবণতা কমে। 

তবে একেবারে সরাসরি মেদ ঝরানোর সঙ্গে চিয়া সিডের অবধি কোন যোগাযোগ রয়েছে কিনা তার প্রমাণ না পাওয়া গেলেও। অতিরিক্ত পরিমাণে চিয়া সিড খেলে হজমের সমস্যা হয় সেই বিষয়ে নিশ্চিত চিকিৎসকরা‌।

চিয়া সিডের পুষ্টিগুণ

সৈয়দা শিরিনা স্মৃতি জানান, দ্রুত ওজন কমাতে খালি পেটে সকালে ও রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস পানির মধ্যে দুই চা চামচ চিয়া সীড ও দুই চামচ লেবুর রস মিশিয়ে খেলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে। চিয়া সিডে আছে ওমেগা-৩ যা হৃদ রোগের ঝুকিয়ে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমাতেও সাহায্য করে। এটি শরীরের শক্তি ও কর্ম ক্ষমতা বাড়ায়। 

এবং প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় চিয়া সিড রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করে তোলে। চিয়া সিড ব্লাড সুগার স্বাভাবিক রাখে যা ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কমায়। এছাড়াও মেটাবলিক সিস্টেমকে উন্নত করার মাধ্যমে একটি ওজন কমাতেও বিশেষভাবে সহায়তা করে থাকে। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম যা হারে স্বাস্থ্য রক্ষায় বিশেষ উপকারী। 

এটি শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে। চিয়া সেট আমাদের শরীরের কোলন পরিষ্কার রাখে ফলে কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে। চিয়া সিট পেটের প্রদাহজনিত বা গ্যাসের সমস্যা দূর করে, ভালো ঘুম হতে সাহায্য করে, ক্যান্সার রোধ করতে সাহায্য করে, হজমে সহায়তা করে, হাঁটু ও জয়েন্টের ব্যথা দুর করে, এটি ত্বক, চুল ও নখ সুন্দর রাখে। 

 আরও পড়ুনঃ ভিটামিন সি সিরামএর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন

পাশাপাশি বিপাকহার বাড়িয়ে তুলতেও সাহায্য করে চিয়া সিড। তাই স্বাস্থ্য সচেতনদের মধ্যে এই চিয়া সিড এর  জনপ্রিয়তা দিনে দিনে বেড়ে যাচ্ছে। জলে ভিজিয়ে পুডিং কিংবা সালাদের ছড়িয়ে খাওয়া যায় এই সিড। আমেরিকার কৃষি বিভাগের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বলা হয়েছে (১ আউন্স) অর্থাৎ দুই টেবিল চামচ চিয়া সিড থেকে পাওয়া যায় ১৩৮ ক্যালোরি। 

গবেষণার তথ্য মতে চিয়া সিড হাইপারটেনশন রক্তচাপের মতো রোগের ঝুঁকি কমায়। যা হৃদরোগের সঙ্গে জড়িত এতে রয়েছে ক্যালসিয়াম ফসফরাস ও ম্যাগনেসিয়াম যা হাড় ভালো রাখতে অনেক বেশি কার্যকরী।

চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম

সপ্তাহে কমপক্ষে তিন থেকে চার দিন সকালে খালি পেটে অথবা রাতে খাওয়ার পরে ঘুমানোর আগে এক দুই চা চামচ পানিতে ভিজিয়ে রেখে ২০ থেকে ৩০ মিনিট পর কাস্টার্ড, স্মুদি সালাদ ও অন্যান্য ফলের জুসের সাথে খাওয়া যেতে পারে। চিয়া সিডের নিজস্ব কোন স্বাদ নেই।

চিয়া-সিড-কেন-খাবেন

চিয়া সিড কত ঘন্টা ভিজিয়ে রাখতে হয়ঃ চিয়া সিড আরো বেশি নরম করে খেতে চাইলে পানি বা দুধের সাথে প্রায় ১০ মিনিট ভিজিয়ে রাখতে হবে। এছাড়াও জেল তৈরি করতে চাইলে পানিতে ১৫ থেকে ২০ মিনিট ভিজিয়ে রাখতে হবে চাইলে রাতে ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে পানির সাথেও খেতে পারবেন।

চিয়া সিড বেশিক্ষণ ভিজিয়ে রাখলে কি হয়ঃ চিয়া সিড বেশিক্ষণ ভিজিয়ে রাখলে এই বীজের মধ্যে থাকা খনিজ ইলেকট্রোলাইটের সমতা বজায় রাখতে সহায়তা করে। পুষ্টিবিদরা বলেছেন চিয়া বীজের মধ্যে রয়েছে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং উচ্চমানের ফাইবার। যা বিপাকহার বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। তাই সারারাত চিয়া সিড ভিজিয়ে রাখার পরে ঘুম থেকে উঠে ভেজানো জল কিংবা সারারাত ভিজিয়ে রাখা সিড স্মুদিতে মিশিয়ে খান অনেকে।

চিয়া সিড পানিতে না ভিজিয়ে খাওয়া যাবে কিঃ চিয়া সিড পানিতে না ভিজিয়েও খাওয়া যায় তবে এগুলি শুকনো খাওয়ার ফলে একটি কুড়মুড়ে অনুভূতি হতে পারে।এছাড়াও চিয়া সিড স্মুদি ও বেকিং এ দুর্দান্ত। ফলে আপনি যখন এগুলি শুকিয়ে খান তখন পর্যাপ্ত জল পান করার কথা মনে থাকে না। যাতে তারা আপনার পেটে জল ভিজিয়ে না রাখে যা আপনাকে তৃষ্ণার্তবোধ করতে পারে। তাই চিয়া সিড ভিজিয়ে রাখা ভালো কিন্তু এটা বাধ্যতামূলক নয় আপনি এগুলো শুকিয়েও উপভোগ করতে পারেন।

বিভিন্ন ড্রিংকস বা জুসের সাথেঃ এই গরমে ভীষণ ক্লান্তির পর ঠাণ্ডা শরবত বা জুস খেতে সবারই ভালো লাগে। তাই নানা ধরনের ড্রিংকসের সাথে বা ফলের জুসের সাথে এই চিয়া সিড মিশিয়ে গরম থেকে শান্তির জন্য খুব আরামে খেতে পারেন। বাইরের দেশে অনেকেই শরবতের সাথে মিশিয়ে খেতে খুবই পছন্দ করে থাকে। 

স্মুথির সাথে মিশিয়েঃ শরবত বা জুসের সাথে চিয়া সিড মিশিয়ে খাওয়ার পাশাপাশি অনেক মানুষই স্মুথির সাথে এই চিয়া সিড খেতে পছন্দ করেন। তাই শসার সাথে চিয়া সিড ও টক দই মিশিয়ে বা অন্যান্য যেকোনো ফলের সাথে ব্লেন্ডার করে মজাদার স্মুথি তৈরি করে ফেলতে পারেন। 

চিয়া সিডের নিজস্ব কোন স্বাদ  না থাকার কারণে আপনি মূলত এইসব মুখরোচক খাবারের সাথে মিশিয়ে যেমন কাস্টার্ড, ওটস ইত্যাদির সাথে সহজেই খেতে পারবেন। বিশেষ করে খালি পেটে অথবা রাতে ঘুমানোর আগে ১ থেকে ২ চা চামচ চিয়া সিড পানিতে ভিজিয়ে রেখে অন্তত ২০ থেকে ৩০ মিনিট পর খেলে স্বাস্থ্য ও স্বাদের ফলাফল একসাথে পাবেন এর।

ওজন কমানোর জন্য চিয়া সিডের ব্যবহার

চিয়া সিডে রয়েছে প্রচুর ওমেগা-৩, ফ্যাটি এসিড যা শরীরের মেটাবলিজম বাড়াতে সাহায্য করে। আর এ দুইটার প্রভাব ওজন দ্রুত কমতে সহায়তা করে। পানি বা দুধে সারারাত চিয়া সিড ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে খেতে পারেন এছাড়া সালাত ওর সিরিয়াল অথবা যেকোন জুসের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন। এছাড়াও চিয়া সিড ভিজিয়ে রেখে টক দই সালাত সিরিয়ালের মধ্যে মিশিয়ে খেতে পারেন। 

এছাড়াও এক গ্লাস জলে চিয়া সিড আগের রাতে ভিজে রেখে পরদিন ওর মধ্যে সামান্য লেবু দিয়ে খেতে পারেন এতে ওজন তো কমবে সেই সঙ্গে পেটো ভর্তি থাকবে। চিয়া সিড হাইড্রোফিলিক, যার অর্থ তারা জলের সাথে ভালো কাজ করে। ভেজানো হলে তা তারা তাদের ওজনের ১০ গুন জলে শোষণ করতে পারে। 

 আরও পড়ুনঃ ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা সম্পর্কে ১১ টি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জেনে নিন

এবং একটি জেলের মতো পদার্থ তৈরি করে। এর ফলে এটি আপনার প্রতিদিনের তরল গ্রহণ বাড়াতে সাহায্য করতে পারে। বিশেষ করে যদি আপনি পর্যাপ্ত সাধারণ জল পান করতে সংগ্রাম করেন তাহলে এটি আপনার জন্য হবে বিশেষ কার্যকরী। চিয়া সিডের চিন্তাকর্ষক উপকারিতা রয়েছে এবং এটি একটি বহুমুখী উপাদান। 

প্রতিদিন এক থেকে দুই টেবিল চামচের বেশি চিয়া সিড খাওয়া উচিত না। এবং ব্যবহারের আগে সর্বদা জল বা দুধে হাইড্রেট করতে হবে। দীর্ঘ সময়ের জন্য পূর্ণতা অনুভব করলে ক্যালোরি গ্রহণের পরিমাণ কমে যেতে পারে যা পেটের অংশে চর্বি হ্রাস ও ওজন হ্রাসে অবদান রাখে। 

তবে মনে রাখবেন একা চিয়া সিড কখনোই ওজন কমাতে পারে না। এটির সাথে বিভিন্ন ধরনের খাবার যুক্ত করে খেলে তবেই ওজন কমতে পারে। এটি একটি সুষম খাদ্য এবং কার্যকর ব্যায়ামের রুটিন এর অংশ হতে হবে।

প্রতিদিন ঠিক কত পরিমানের চিয়া সিড গ্রহণ করা যায়

আমরা সবাই জানি চিয়া সিড আমাদের শরীরের জন্য ঠিক কতটা উপকারী এই নিয়ে নতুন করে আর বলতে হবে না। তবে এই চিয়া সিড অতিরিক্ত সেবনের কারণে হতে পারে স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। অবশ্যই চিয়া সিড একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে খেতে হবে। প্রতিদিন সুবিধা অনুযায়ী লোকের চিয়া সিডের পরিমাণ পরিস্থিতি এবং লক্ষ্যের উপর নির্ভর করে। 

সাধারণভাবে একজন প্রাপ্ত পৌষ্টিক খাবার হিসেবে প্রতিদিন প্রাপ্ত চিয়া সিডের পরিমাণ ম্যাট্রিক জড়ে প্রদর্শিত হতে পারে। ইতি প্রাপ্ত পরিমাণ (১৫ গ্রাম) যা প্রায় এক বড় চামচ চিয়া সিড এর সমান। এই পরিমাণ চিয়া সিডের সামগ্রিক পৌষ্টিক সঙ্গতির ওপর নির্ভর করে। 

এবং বেশি অধিক প্রোটিন হাইবার, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম,ওমেগা-৩ ফ্যাট ও আন্তরবাহিক  ফলোনয় মৌলিক এসিড যেমনি ওমেগা সরবরাহ করতে সাহায্য করতে পারে এই পরিমাণ চিয়া সিড। তবে কোন নির্দিষ্ট চিকিৎসা শাস্ত্রীক পরামর্শের আধারে পরিবর্তিত হতে পারে এটি। 

যদি আপনি চিয়া সিড যোগ করার সময় কোন স্বাস্থ্য সমস্যা বা চিকিৎসা প্রয়োজন হয় তবে আপনার ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করাটি সুপরিসর এবং সুস্থ একটি উপায়। চিয়া সিডে থাকে পর্যাপ্ত ফাইবার। এটি অন্ত্রের শর্করা শোষণ করার ক্ষমতায় হস্তক্ষেপ করতে পারে। যে কারণে কমে যেতে পারে রক্তে শর্করার মাত্রা। 

চিয়া সিডের এই বৈশিষ্ট্য ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সমস্যা হতে পারে। বিশেষ করে যারা ইতিমধ্যেই ওষুধ এবং ইনসুলিন গ্রহণ করছেন, তাদের ক্ষেত্রে। অতিরিক্ত চিয়া সিড খাওয়ার অভ্যাস তাদের রক্তে শর্করার মাত্রা পরিবর্তন করতে পারে। যার ফলে ওষুধ এবং ইনসুলিনের পরিবর্তন প্রয়োজন হতে পারে। হেলথ রিপোর্ট অনুসারে, প্রতিদিন ১-১.৫ টেবিল চামচ চিয়া সিড শরীরের পুষ্টির জন্য যথেষ্ট। 

চিয়া সিডে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ফাইবার, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস এবং জিঙ্ক রয়েছে। চিয়া সিড হলো ক্ষুদ্র এক ধরনের বীজ যার নিজস্ব কোনো স্বাদ নেই। রাতে এই সিড পানিতে ভিজিয়ে রাখতে পারেন এবং সকালে খালি পেটে পান করতে পারেন। চাইলে চিয়া সিড দিয়ে পুডিং তৈরি করেও খেতে পারেন। তবে এই সিড আগে ভিজিয়ে রাখতে ভুলবেন না। 

চিয়া সিড ভিজিয়ে রাখলে তা ফুলে অনেক বড় ও নরম হয়। এটি শুকনো অবস্থায় খাওয়া হলে পরবর্তীতে তা ফুলে খাদ্যনালী আটকে দিতে পারে। তাই কখনো শুকনো অবস্থায় চিয়া সিড খাবেন না।

চিয়া সিডের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

চিয়া সিড আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। তবে অতিরিক্ত কোন কিছুই আমাদের শরীর-স্বাস্থ্যের জন্য কখনোই ভালো না এই কথাটি অবশ্যই মানতে হবে। তেমনি চিয়া সিড সেবন করারও অবশ্যই একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ আছে এর বেশি অতিরিক্ত চিয়া সিড খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। 

চিয়া-সিডের-পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

 চিয়া সিড বেশি খেলে স্তন ক্যান্সার এবং প্রোস্টেট ক্যান্সার বাড়িয়ে দেয়। এতে প্রচুর পরিমাণে় ফাইবার থাকায়, পরিমাণের থেকে বেশি চিয়া সিড খেলে পেটের ব্যথার সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে। অতিরিক্ত পরিমাণে চিয়া সিড খেলে ওজন অস্বাভাবিকভাবে কমে যেতে পারে যা স্বাস্থ্যের জন্য খারাপ।

  • অতিরিক্ত চিয়া সিড খেলে পেটের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • গবেষণা থেকে বলা হয়েছে চিয়া সিড প্রোটেস্ট ক্যান্সার এবং স্তন ক্যান্সারকে বাড়িয়ে তুলতে পারে তাই এটি সীমিত পরিমানে খাওয়া উচিত।
  • অতিরিক্ত চিয়াড খেলে ওজন অস্বাভাবিক মাত্রায় কমে যেতে পারে।
  • চিয়া সিড দেহের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে রক্তচাপ কমায়। তাই অতিরিক্ত চিয়া সিড সেবনে রক্তচাপ বেশি কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে গেলে ফাইবার জাতীয় খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। কিন্তু উপকার হবে ভেবে যদি অতিরিক্ত ফাইবার জাতীয় খাবার (চিয়া সিড) খেয়ে ফেলেন তাহলে পেট ব্যথা গ্যাস হজমের সমস্যা ডায়রিয়ার মত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • গলায় আটকে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • এলার্জিজনিত সমস্যা হতে পারে।
  • অতিরিক্ত পরিমাণ স্পিড হাওয়ায়। রক্তচাপ বেশি কমে যেতে পারে।
  • পেটে ব্যথা হতে পারে।
  • বদহজমে সমস্যা হতে পারে।
  • উচ্চ রক্তচাপ থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খেতে হবে।

লেখক এর শেষ কথা

চিয়া সিড সম্পর্কিত সকল তথ্য এর উপকারিতা অপকারিতা এটি কখন খেতে হয়, কিভাবে খেতে হয়, কাদের জন্য এটি ভালো এই সম্পর্কিত সকল তথ্য উপরের পোস্টের মাধ্যমে আমরা বিস্তারিত বিশ্লেষণ করেছি। আশা করছি আপনি উপরের পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে চিয়া সিডের সকল বিষয় সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। 

সবশেষে একটাই কথা বলতে চাই চিয়া সিড অবশ্যই ওপরের বলা নির্দিষ্ট পরিমাণ এর ভিতরে খেতে হবে। অতিরিক্ত খেলে এটি শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। সুস্বাস্থ্য বিষয়ক এমন আরো সকল পোস্ট পড়তে আমাদের ওয়েবসাইটের হোম পেজে ভিজিট করুন।

আরও পড়ুনঃ কাঁচা ছোলা খাওয়ার ১০টি উপকারিতা ও অপকারিতা

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অমৃতা ব্লগারের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url