ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা সম্পর্কে ১১ টি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জেনে নিন
সূচিপত্রঃ ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা সম্পর্কে ১১ টি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
- ডায়াবেটিস হলে কি কি ফল খাওয়া উচিত
- ডায়াবেটিস রোগীরা কি টক দই খেতে পারবে
- ডায়াবেটিস রোগীরা কি মিষ্টি ফল খেতে পারবে
- ডায়াবেটিস হলে কি দুধ খাওয়া যায়
- কোন ফল খেলে সুগার কমে
- ডায়াবেটিস রোগীর জন্য কি কম ক্যালরি খাবার খাওয়া উচিত
- ডায়াবেটিসের রোগীর রাতের খাবার কি খাওয়া উচিত
- ডায়াবেটিসে দুধ নাকি দই ভালো
- ডায়াবেটিস রোগীর রোজা রাখা যাবে কি
- প্রি ডায়াবেটিস রোগীর খাবার কেমন হওয়া উচিত
- ডায়াবেটিস কমানোর উপায় কি
ডায়াবেটিস হলে কি কি ফল খাওয়া উচিত
ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে ফলাহারভীতি কাজ করে। আমরা সবাই জানি ডায়াবেটিসের সব
থেকে বড় শত্রু হলো মিষ্টি জাতীয় কোন খাবার। এমন অনেক ফল আছে যেই ফলগুলো
বেশিরভাগ মিষ্টি হয়ে থাকে তাই অনেকেই ফল খেতেও ভয় পান কিছু ফল রয়েছে যেগুলো
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকার বয়ে আনে। আজকে সেই সকল ফল এবং সেই ফলের উপকারিতা
সম্পর্কে আলোচনা করব।
আপেলঃ সাধারণত বিশেষজ্ঞরা সুস্থ থাকার জন্য প্রতিদিন একটি করে হলেও আপেল খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তবে ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য খাবারের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের বিধি নিষেধাজ্ঞা মেনে চলতে হয়। এমনকি এই ফল খাওয়ার জন্য রয়েছে সীমাবদ্ধতা। আপেলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণের সাহায্য করে।
আপেলের মধ্যে রয়েছে পেকটিন যা ব্লাড সুগার কম করতে সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞদের মতে মিষ্টি আপেল ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য ক্ষতিকর নয় একেবারেই। তবে খুব বেশি না খাওয়াই ভালো। ডায়াবেটিস রোগীরা প্রতিদিন দুটি অথবা একটি আপেল খেতে পারবেন তবে আপেল খোসা সহ খাওয়া ভালো কারণের খোসায় থাকে প্রচুর এনটিঅক্সিডেন্ট।
পুষ্টির একটি বড় অংশ আপেলের ত্বকে অর্থাৎ খোসায় থাকে। বাজারে
বিভিন্ন প্রকারের আপেলের জোসসহ বিভিন্ন ফলের জুস কিনতে পাওয়া যায় ডায়াবেটিস
রোগীদের জন্য শেষ জুস খাওয়া একেবারেই উচিত না। বাজারে বিক্রিত আপেলের জুসের
মধ্যে বাড়তি চিনি মেশানো থাকে যা ডায়াবেটিস রোগীর ক্ষতির কারণ হতে পারে।
অ্যাভোকাডোঃ নিয়মিত অ্যাভোকাডো খাওয়া আপনার লিপিড প্রোফাইল উন্নত করে। ট্রাই গ্লিসারাইড এবং
এলডিএল কমায় এবং এইচ ডি এল বাড়ায়। ডায়াবেটিসের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন ।
ডায়েটে এভোকেট অন্তর্ভুক্ত করা খাওয়ার পরে ইনসুলিন এবং রক্তে শর্করার মাত্রা
বৃদ্ধি রোধ করতে পারে এভোকাডো খাওয়া পেটের চর্বি বা ভিসারাল ফেটো কমাতে
পারে।
যারা ডায়াবেটিসে ভুগছেন তাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় এভোকাডো অবশ্যই অন্তর্ভুক্ত করাটা প্রয়োজন। কারণ এটি ইনসুলিন উৎপাদনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে সেই সঙ্গে রক্তের সুগারের মাত্রা কমায়। অ্যাভোকাডো তে কার্বোহাইড্রেট এর পরিমাণ খুবই কম পাওয়া যায় পাশাপাশি এতে উপস্থিত স্বাস্থ্যকর ফ্যাটের কারণে ওজন বাড়ে না।
যা আপনাকে ফির দেখায় যেহেতু স্থলতা অনেক রোগের মূল তাই এড়াতে অবশ্যই অ্যাভোকাডো খেতে হবে। এটি ক্রিমি এবং সুস্বাদু এগুলি ভিটামিন পুষ্টি এবং ফাইবারের পূর্ণ কম কার্ব উচ্চ ফাইবার অনুপাত রক্তে শর্করার স্থিতিশীলতার জন্য দুর্দান্ত। অ্যাভোকাডোর মধ্যে থাকা ভালো চর্বি আপনার হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের মত ডায়াবেটিসের জটিলতা প্রতিরোধ করতে।
এবং আপনার ইনসুলিন কে আরো কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে অনেক সহায়তা করে। এছাড়াও
নয়টি নিবন্ধনের পর্যালোচনার ফলাফলে দেখা গেছে যে আবার কোন বীজ এবং পাতার নির্যাস
অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে ছিল যে উভয়ই প্রতিশ্রুতিশীল অ্যান্টি ডায়াবেটিক
এজেন্ট হিসাবে সম্ভাবনা দেখায়।
পেঁপেঃ অ্যান্টি
অক্সিডেন্ট ভরপুর ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর পাকা পেঁপে
ক্যান্সারের মতো দুরারোগ্যবিধি প্রতিরোধ করে এবং ডাইবেটিস কমাতেও অনেক সহায়তা
করে। এছাড়া পেপে তে থাকা ক্যারোটি নিয়ে ভিটামিন সি এবং ই ত্বকের জন্য অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ। অনেক আগে থেকেই কাঁচা পেঁপে বহু রোগের মহর্ষ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে
আসছে।
স্বাস্থ্যকর খাবারের তালিকায় পেঁপের অবস্থান অন্যতম। পেঁপে কাঁচা অবস্থায় এবং পাকা অবস্থায় দুইভাবে খাওয়া যায়। তবে কাঁচা পেঁপে রান্না করে খাওয়া কিংবা এমনিতেই খাওয়াতে অনেক বেশি উপকারী আছে পাকা পেঁপের থেকে। পুষ্টিবিদরা বলেছেন কাঁচা পেঁপের মধ্যে এমন কিছু প্রাকৃতিক পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা সারিয়ে তুলতে পারে বহু জটিল রোগ।
কাঁচা পেঁপে তে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ খনিজ রয়েছে। এগুলো শরীরে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এই খনিজ গুলি ইনসুলিন নিঃসরণ বাড়াতেও সহায়ক। এটি মূল এনজাইমের বিরুদ্ধে কাজ করতে পারে যা টাইপ ২ ডায়াবেটিসের জন্য দায়ী। এছাড়াও পাকা পেঁপেও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে উপকারী। ইউ এস ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচার ইউ এস ডি এ অনুসারে এক কাপ তাজা পাকা পেঁপেতে প্রায় ১১ গ্রাম শর্করা থাকে।
পেঁপেতে রয়েছে শ্রাবণেড যা রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। আপনার
প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় এক বা দুটি ফল যোগ করে আপনার সামগ্রিক স্বাস্থ্যের
উন্নতিতে সাহায্য করতে পারে। তবে ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে অবশ্যই একটা জিনিস
মাথায় রাখবেন আপনার ডায়েটে কোন কিছু যোগ করার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
বেরি জাতীয় ফলঃ বেরিয়ে জাতীয় সকল ধরনের ফলে
ডায়াবেটিসের রোগীর জন্য উপকারী। আমাদের দেশে জামসহ সহজলভ্য। এ ধরনের ফলে থাকে
প্রচুর এন্টিঅক্সিডেন্ট যার শরীরের পক্ষে খুব ভালো তাজা বেরি কিনতে না পাওয়া
গেলে ড্রাই ফুড হিসেবে খেতে পারেন এই ফল। এটি ডায়াবেটিস রোগীরা
নিশ্চিন্তে খেতে পারে।
এছাড়াও স্ট্রবেরি ব্লুবেরী মতফলে গ্লাসেমিক ইনডেক্স কম ফাইবার এবং ভিটামিন সি
সমৃদ্ধ থাকে তাই নিশ্চিন্তে এই ফল ডায়াবেটিস রোগীরা খেতে পারেন লেবু জাতীয় ফল
ডায়াবেটিকরা কমলালেবু মতো ফলও খেতে পারবেন। দেরি জাতীয় ফল আপনার মিষ্টি
খাবার খাওয়ার ইচ্ছে পূরণের পাশাপাশি ডায়াবেটিসে অনেক উপকার করে থাকে। কারণ এই
ফলগুলো সবগুলোতেই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভিটামিন এবং ফাইবার সমৃদ্ধ শক্তিতে ভর।
ডায়াবেটিস রোগীরা কি টক দই খেতে পারবে
ডায়াবেটিস রোগীরা, মিষ্টি দই এর পরিবর্তে টক দই অবশ্যই খেতে পারবে। দই স্বাস্থ্যকর এবং এর অনেক উপকারিতা থাকলেও মিষ্টি দই থেকে সম্পূর্ণরূপে দূরে থাকা উচিত ডায়াবেটিস রোগীদের। মিষ্টি দই খেতে সুস্বাদু হলেও এতে থাকা চিনি আর প্রিজারভেটিভ আপনার রক্তে শর্করা কে বাড়িয়ে তুলতে পারে।
এছাড়াও ডায়াবেটিসে গ্রিক দই বা আইসল্যান্ডিক দই সন্ধান করে খেতে পারেন। এই ধরনের দই অন্য দইয়ের তুলনায় কম কার্বোহাইড্রেট সহ একটি ঘন প্রোটিন সমৃদ্ধ পণ্য রেখে যায় অন্যান্য দইয়ের তুলনায় তাদের ল্যাক্টোজ এর মাত্রা কম থাকে। ডায়াবেটিস হলে টক দই আপনার জন্য অনেক উপকারী। ২০০ গ্রাম টক ধরে প্রায় বিশ গ্রাম প্রোটিন থাকে যা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী।
আর এদের স্বাদ বাড়িয়ে নীতির সঙ্গে আপনার পছন্দের কিছু ফল ও মিশিয়ে নিতে
পারে।
টক দইয়ের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স খুবই কম ফলে অন্যান্য হাই
কার্বোহাইড্রেট খাবারের তুলনায় টক দই খেলে রক্তের শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়ে
না। ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন প্রচুর পরিমাণে আছে টক দই এতে হাড়ে সুস্বাস্থ্য বজায়
থাকে ডায়াবেটিসের কারণে হাড়ের রোগ দেখা দেয় না।
টক দই প্রোটিন রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে পেট দীর্ঘক্ষণ ভর্তি থাকে টক দই খেলে। এতে করে ঘনঘন খিদে পাওয়ার প্রবণতা কমে যায় এছাড়াও নিয়ন্ত্রণে থাকে আমাদের ওজন। কবে শোকরা বলেছেন যারা সপ্তাহে অন্তত ১২৫ গ্রাম পরিমাণ ননি বিহীন দুই গ্রহণ করেন তাদের ডায়াবেটিসের ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় প্রায় ২৪ শতাংশ কম থাকে।
তবে ঠিক কি প্রক্রিয়ায় ঢুকতেও চাঁদ খাবার ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে তা এখনো
স্পষ্ট নয়। দুধে যে প্রবায়োটি কাছে তা বিপাক ক্রিয়ার সব অঙ্গকে সুস্থ রাখে
ভিটামিন কে ও ভিটামিন ডি বিপাকক্রিয়াকে সচল রাখে। সেজন্যই গবেষকরা বলেছেন টক দই
খাওয়াটা অবশ্যই ভালো ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে।
আরও পড়ুনঃ কাঁচা ছোলা খাওয়ার ১০টি উপকারিতা ও অপকারিতা
ডায়াবেটিস রোগীরা কি মিষ্টি ফল খেতে পারবেন
আমরা সকলেই জানি ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে মিষ্টি জাতীয় যেকোনো কিছুই খুবই ক্ষতিকর। তবে এমন কিছু ফল বা খাবারও রয়েছে যেগুলোতে নিশ্চয়ই পরিমাণ থাকলেও সেগুলো ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই উপকারী। যেমন টক দই, ডার্ক চকলেট, আপেল, নাশপাতি, আঙ্গুর, জিয়া পুডিং, বাদাম ও বীজের মিশ্রণ। এ সকল মিষ্টি জাতীয় খাবার ডায়াবেটিস রোগীরা নিঃসন্দেহে খেতে পারেন।
আর এগুলো স্বাস্থ্যের জন্য মোটেও ক্ষতিকর নয় বরং বেশ উপকার করবে ডায়াবেটিস
থাকলেও এ সকল মিষ্টি খাবার খাওয়া যাবে। এছাড়া অন্যান্য ফল যদি স্টাচ্ই এবং
স্বাদে মিষ্টি হয় তাহলে ৫০ থেকে ৭৫ গ্রাম খেতে পারেন। ফলের মধ্যে কার্বোহাইড্রেট
এর পাশাপাশি ভিটামিন মিনারেলস থাকে। তবে রক্তে শর্করার মাত্রা অনুযায়ী
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিকে এক থেকে দুই রকমের ফল দেওয়া যায়। দৈনিক একটি
মিষ্টি ও টক ফল খেতে পারবে।
ডায়াবেটিস হলে কি দুধ খাওয়া যায়
দুধ ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ যা ক্যালসিয়াম ধরে রাখে এবং হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে। এছাড়া দুধে রয়েছে ভিটামিন বি১২ যার লোহিত রক্তকণিকা উৎপাদন করে। শরীরের স্নায়বিক কার্যক্রম পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দুধে থাকা ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তি ও রোগে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অনেক সহায়তা করে থাকে। বিশেষ করে দোয়ের মতো দুগ্ধ যার পূর্ণ ডায়াবেটিসের দারুন উপকারী। কারণে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত নির্দ্বিধায় দুধ খেতে পারেন।
ছবির মতে ডায়াবেটিস রোগীদের দুধ খাওয়ার ক্ষেত্রে কোন বাধা নেই কারণ দুধের মত স্বাস্থ্যকর পানিও খুব কমই রয়েছে দুধে রয়েছে বিভিন্ন খনিজ পদার্থ বিভিন্ন ধরনের। প্রোটিন এবং সেই সঙ্গে ক্যালসিয়াম এগুলি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য জরুরি। দুধে থাকা ক্যালসিয়াম ডাইবেটিসের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে অনেকটাই সহায়তা করে। এর জন্য দিনে এক গ্লাস দুধ খেলে কোন সমস্যা হয় না।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য তবে দুধের সঙ্গে কয়েকটি জিনিস যদি মিশিয়ে খেতে পারেন তাহলে আরো বেশি উপকার পাওয়া যায়। যেমন দুধের সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে। দুধের সঙ্গে নিয়মিত দারচিনি গুরু মিশিয়েও খাওয়া যায় তাহলে এতে শর্করার মাত্রা অনেকটাই বাগে থাকে।
দুধের সঙ্গে আরও একটি জিনিস মিশিয়ে খাওয়া যায় সেটি হল বাদাম বাটা। বাদাম বাটা
শরীরের জন্য বিভিন্ন উপকারী প্রোটিন ফাইবার থেকে ক্যালসিয়ামের সঙ্গে সবকিছু পাবে
শরীর। নিয়ন্ত্রণেও থাকবে ডায়াবেটিস। রোজের ডায়েটে কাঠবাদাম বা সইয়া দুধ
রাখলেও বেশ উপকার পাওয়া যায়।
আরও পড়ুনঃ কেনো মধু খাবেন? মধুর উপকারিতা ও অপকারিতা
কোন ফল খেলে সুগার কমে
ডায়াবেটিস খুবই গরুতোর একটি অসুখ। এ রোগে আক্রান্ত হলে একাধিক শরীরের মধ্যে জটিলতা সৃষ্টি হয়। রোগীদের জন্য রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখাটা খুব একটা সহজ কথা নয়। এক্ষেত্রে অবশ্যই ডায়েটে বিরাট পরিবর্তন আনা জরুরী না হলে রক্তের সুগারের মাত্রা অনেক বেশি বেড়ে যায় তাই বিশেষজ্ঞরা বারবার করে ডায়াবেটিস রোগীদের খাদ্যাভাস নিয়ে সতর্ক করে থাকে।
ডায়াবেটিস রোগীদের সুস্থ থাকতে ফলাহার করাও একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ
বিষয়ের মধ্যে পড়ে। নিয়মিত ফলহার করা থেকে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকতে পারে।
কিভাবে বুঝবেন যে কোন ফল খেলে ডায়াবেটিস কমবে বা কোন ফল খেলে ডায়াবেটিস বাড়তে
পারে? এই ছয়টি পরিচিত ফল খেলে ডায়াবেটিস বাগে থাকবে সুস্থ থাকবে আপনার শরীর
- সুপার ফুড পেঁপে
- আপেল
- কমলালেবু
- আমলকি
- অ্যাভোকাডো
- পেয়ারা
এই ফলগুলি নিয়মিত খাওয়ার মাধ্যমে আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিকের গতিতে
চলে আসবে। তাই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে ফলাহার করা খুবই একটি
গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
ডায়াবেটিস রোগীর জন্য কম ক্যালোরি খাবার খাওয়া উচিত কিনা
ওজন ব্যবস্থাপনা প্রোগ্রাম এ কম ক্যালরিযুক্ত খাবার ব্যবহার করা হয় যা অনেক লোককে তাদের টাইপ টু ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করার জন্য কাজ করে। প্রথম বারো সপ্তাহের জন্য লোকেরা একটি কম ক্যালরি মোট খাদ্য প্রতিস্থাপন পরিকল্পনা অনুসরণ করে। সমস্ত খাবারকে স্যুপ এবং শেক দিয়ে প্রতিস্থাপন করে।
খুবই সহজ উপায় শুধুমাত্র কম ক্যালরিযুক্ত খাদ্য গ্রহণ টাইপ ডায়াবেটিস কার্যকরীভাবে প্রতিকার করে। জীবনযাপনের পদ্ধতি পরিবর্তনে ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে ওষুধের তুলনায় অনেক বেশি প্রভাব রাখতে পারে কম ক্যালরিযুক্ত খাদ্য গ্রহণ। মেদ বহুল ও ডায়াবেটিস রোগী যারা মারাত্মক হৃদরোগ এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিতে ভুগছেন তাদের ওপর গবেষণায় গবেষকরা দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব আবিষ্কার করতে পেরেছেন।
আরও পড়ুনঃ কলার উপকারিতা ও অপকারিতা
গবেষকরা চার মাস ব্যাপী দৈনন্দিন ৫০০ ক্যালোরিযুক্ত খাবার খেতে দিয়ে ১৫ জন
ডায়বেটিস টু আক্রান্ত রোগীর হৃদপিন্ডের সমস্যা জনিত এবং ম্যাট বহুল রোগীদের
পর্যবেক্ষণ করেন। এদের মধ্যে সাতজন পুরুষ এবং আটজন নারী ছিল। ফলাফলে দেখা গেছে
তাদের ক্যালরির মাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেয়েছে।
ডায়াবেটিস রোগীর রাতের খাবার কি হওয়া উচিত
রাতের খাবার ডায়াবেটিসের রোগীদের রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণের একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক। ডায়াবেটিস রোগীর রাতের খাবার নিয়ে অনেকেই অনেক চিন্তায় থাকেন। অনেকেই মনে করেন রাতের বেলায় কম খাবার খেতে হবে আবার অনেকেই ভাবেন রাতের খাবার একেবারে বাদ দিলেই ভালো হয়। আবার অনেকে মনে করে রাত্রে রুটি খাইলে ভালো হবে চিন্তা ভাবনা কোন কার্যকরী চিন্তা-ভাবনা নয়।
এটি কোন ওষুধ নয় এটা ভাতের মতোই কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার। ডায়াবেটিসের শর্করা বেছে ও পরিমাপ মত খেতে হয়। সেটা রুটি হোক বা ভাত বা অন্যান্য কোন খাবার। ডায়াবেটিস রোগীরা ভাত খেতে পারে। তবে এর পরিমত পরিমানে খেতে হবে। সাদা চালের তুলনায় ব্রাউন রাইস বেশি উপকারী তবে চাল যত বেশি রিফাইন হয় তার পুষ্টি মূল্য কমে যায়।
সাদা তালের তুলনায় ব্রাউন রাইসের ভিটামিন মিনারেলস ও ফাইবার বেশি থাকে রাউন রাইসের জিআই ইনডেক্স ৬৮ হোয়াইট ডি আই ইনডেক্স ৭৩। শর্করা খাবার হল ভাত, রুটি, নুডুলস। এসব সীমিত পরিমানে খেতে হবে এবং সাদা চালো আটা বা ময়দার পরিবর্তে লাল চাল ও আটা খাওয়া ভালো। এতে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বা জিআই কম।
ডায়াবেটিসে দুধ নাকি দই ভালো
ডায়াবেটিসের আক্রান্ত মানুষদের জন্য দুধ এবং দই দুটোই খুবই উপকারী। তবে দই খাওয়ার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। যেমন ডায়াবেটিসের রোগীদের মিষ্টি দই খাওয়া যাবেনা। মিষ্টি দই এর পরিবর্তে টক দই খাওয়া যেতে পারে এটি খুবই উপকারী এবং কার্যকরী। একাধিক গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে বিশুদ্ধ দুধ স্বাস্থ্যের জন্য দারুন উপকারী।
এমনকি টাইপ টু ডায়াবেটিসের ঝগি ১১ থেকে ১৭ শতাংশ কমিয়ে দিতে পারে। বিশেষ করে দয়ের মতো দুগ্ধ জাত পণ্য ডায়াবেটিসের দারুন উপকারী। কারণ ডায়াবেটিসে আক্রান্তরাও নির্দ্বিধায় দুধ খেতে পারেন। ডায়াবেটিস থাকলে টক দই আপনার জন্য হতে পারে উপকারী। ২০০ গ্রাম টক দইয়ে প্রায় ২০ গ্রাম প্রোটিন থাকে। যা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী আর সাত বাড়িয়ে নিতে এর সঙ্গে আপনার পছন্দের কিছু ফল মিশিয়ে খেতে পারেন।
ডায়াবেটিসের রোগীদের বেশিক্ষণ খালি পেটে থাকা উচিত নয়। খালি পেটে
বেশিক্ষণ থাকলে বিপদ। দুটো খাবারের মাঝে শশার সঙ্গে টক-দই, ডিম সিদ্ধ, ছোলা,ছাতু।
আপেল, বেরি ফল, অ্যাভোকাডো, নাশপাতি এগুলো খেতে পারেন। তাই ডায়াবেটিসের রোগীদের
ক্ষেত্রে দুধ এবং দই দুটোই খাওয়া ভালো।
ডায়াবেটিস রোগী রোজা রাখা যাবে কি
ডায়াবেটিস রোগীদের নিয়ম করে ওষুধ খেতে হয়। এবং খাবারও খেতে হয় রমজান মাসে কিভাবে রোজা রাখবেন সেটি অনেক ডায়াবেটিস রোগীর কাছে চিন্তার বিষয় হয়ে পড়ে। ডাক্তার জয়নুল আবেদীন বলেন, যেহেতু রোজা পালন করা একজন মুসলিমের জন্য ফরজ। সেহুতু ধর্মপ্রাণ মুসলিমের জীবনে রোজা রাখার গুরুত্ব অনেক। ডায়াবেটিস রোগীরা রোজা রাখতে পারবেন।
তবে অনেক ডায়াবেটিস রোগীদের ঝুঁকি থাকে। যেসব রোগীর প্রায়ই হাইপোগ্লাইসেমিয়া হওয়ার ঘটনা আছে। বিশেষ করে রমজানের আগে তিন মাসের মধ্যে রক্তে সুগারের মাত্রা অনিয়ন্ত্রিত থাকলে তাদের জন্য রোজা রাখা ঝুঁকিপূর্ণ হয়। সঙ্গে কিডনির সমস্যা রয়েছে যাদের। অনেক বেশি শারীরিক পরিশ্রম করতে হয় যেসব ডায়াবেটিস রোগীদের। অন্তঃসত্ত্বা ডায়াবেটিসের রোগীদের।
ছাড়াও খুব শারীরিক অসুস্থতা আছে এমন ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে থাকে রোজা রাখা। একজন ডায়াবেটিস রোগী রোজার সময় অনেক জটিলতার সম্মুখীন হতে পারে। এ সকল বিষয় সতর্ক থাকতে হবে। যেমন রক্তে সুগার অনেক কমে যাওয়া বা হাইপোগ্লাইসমিয়া, রক্তে সুগার অনেক বেড়ে যাওয়া ডায়াবেটিস কিটো এসিডোসিস হতে পারে।
আরও পড়ুনঃ ড্রাগন ফলের খোসার উপকারিতা
যার ফলে রোগী অজ্ঞান হয়ে অনেক সময় মৃত্যু ঝুঁকি সৃষ্টি হয় এছাড়াও পানি
শূন্যতা দেখা দিতে পারে। যেকোনো জটিল পরিস্থিতি এড়াতে অবশ্যই শারীরিক অবস্থা
বুঝে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এক্ষেত্রেও রোগী যদি রোজা রাখতে চায় তাহলে
অবশ্যই তাকে খাবারের তালিকা মেনে চলতে হবে এবং ইনসুলিন ওষুধের ডোজ পরিমান ঠিক
রাখতে হবে। তারপরও রোগীদের উচিত রোজার আগে ডায়াবেটিস ডাক্তারের সঙ্গে দেখা করে
ওষুধ ও ইনসুলিনের পরিমাণ নির্ধারণ করে নেওয়া।
প্রি-ডায়াবেটিস রোগীর খাবার কেমন হওয়া উচিত
প্রি-ডায়াবেটিসের জন্য জীবন যাত্রার পরিবর্তনই হচ্ছে একমাত্র চিকিৎসা। এর মানে হচ্ছে এক্ষেত্রে সাধারণত তেমন কোনো ওষুধ লাগেনা। এ অবস্থায় প্রথমত সতর্ক থাকতে হবে এবং সেই সঙ্গে নিয়ম মানতে হবে। সেটা অবশ্যই খাবারের তালিকা ঠিক রাখতে হবে যেমন শরকরা বকুল খাবার সাদা ভাত সাদা রুটি মিষ্টি ফল হিসাব করে খেতে হবে।
এছাড়াও আজ বহুল খাবার যেমন ডাল শাকসবজি টক ফল ইত্যাদি বেশি বেশি খেতে হবে। স্যাচুরেটেড ফ্যাট যেমন ঘি মাখন ডালডা কম খেতে হবে এসবের পরিবর্তে সয়াবিন তেল কেনলা তেল সূর্যমুখীর তেল ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে। ডিম সিদ্ধ দুধ টক দই বিভিন্ন ধরনের ফল যেমন আপেল নাশপাতি অ্যাভোকাডো কমলা পেয়ারা এগুলো খাওয়া যেতে পারে।
এছাড়াও সপ্তাহে পাঁচ দিন ৩০ মিনিট করে দ্রুত হাঁটতে হবে। একসঙ্গে ৩০ মিনিট না
পারলে ১০ মিনিট করে দিনে তিনবার হাঁটতে হবে। ওজন ঠিক রাখা প্রি ডায়াবেটিসের একটি
অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের ধূমপান ও তামাক সেবন
সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতে হবে। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিকে সুষম খাবার নিয়মিত
ব্যায়াম ও শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে। ঘুমকে অগ্রাধিকার বেশি দিতে হবে। অতিরিক্ত
মানসিক চাপ নেওয়া থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে।
প্রি-ডায়াবেটিসের লক্ষণ
প্রি-ডায়াবেটিসের সাধারণত এমন কোন লক্ষণ নেই যার মাধ্যমে নিশ্চিত করে আমরা বলতে
পারি যে একজন ব্যক্তি এই সমস্যায় আক্রান্ত হয়েছেন। তবে সাধারণত যে লক্ষণ গুলো
আমাদের শরীরে দেখা যেতে পারে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে।
১। তৃষ্ণা বেড়ে যাওয়া
২। ঘনঘন প্রস্রাব হওয়া
৩। ক্লান্তি আসা
৪। ঘাস শুকাতে সময় নেওয়া
৫। চোখে ঝাপসা দেখা
এই কয়েকটি শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে অবশ্যই আমাদের ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
এবং আমাদের নিয়মিত জীবনেও কিছু পরিবর্তন আনতে হবে। যদি আমরা চলাফেরা থেকে শুরু
করে খাবার দাবার সবকিছু সঠিক পরিবর্তন বা সঠিক গাইডলাইন আনতে পারি তাহলে
প্রি-ডায়াবেটিস থেকে আমরা মুক্তি পেতে পারি।
ডায়াবেটিস কমানোর উপায়
বাংলাদেশের মধ্যে ডায়াবেটিস রোগীর ৯৭% টাইপ ২। সে ক্ষেত্রে এই ধরনের ডায়াবেটিস
প্রতিরোধ যোগ্য। সঠিক পদক্ষেপ নিলে এই রোগকে সারানো যায়। এজন্য বড় কোন আয়োজনের
প্রয়োজন নেই। রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণের সহজ কিছু টিপস এবং নিয়মিত চলাফেরা
পরিবর্তন খাবারের পরিবর্তন আনলে এটি সহজলভ্য করা সম্ভব যেমন।
- রাত্রিবেলার খাবার খেতে হবে সময় মত
- খাবারের তালিকা ঠিক রাখতে হবে
- আশযুক্ত গোটা শস্য খাওয়ার প্রবণতা বাড়াতে হবে
- ফাস্টফুড সহ কোমল পানীয় পরিহার করতে হবে
- ভিন্ন আচার অনুষ্ঠানে পরিবেশিত স্বাস্থ্যকর খাদ্য আবর্জনীয় সেগুলো পরিহার করতে হবে
- নিয়মিত সময় করে হাঁটতে হবে
- একটানা অধিক সময় বসে কাজ করা যাবে না
- ধূমপান সম্পূর্ণরূপে বর্জন করতে হবে
- রক্তের গ্লুকোজ লিপির রক্তচাপ ওজন অবশ্যই সময়মতো লক্ষ্যমাত্রায় রাখতে হবে
এই সকল নিয়ম মেনে একজন ডায়াবেটিস রোগী যদি চলতে পারে তাহলে অবশ্যই ডায়াবেটিস রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। তবে খাওয়া-দাওয়ার বিষয়ে অবশ্যই আপনার ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। ২০১২ সালে আন্তর্জাতিক ডায়বেটিস ফেডারেশন ডায়াবেটিসকে বৈশ্বিক মহামারী হিসেবে ঘোষণা করে। পৃথিবীর অধিকাংশ দেশেই বেপরোয়া ভাবে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। পাকিস্তানের পর বাংলাদেশে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
লেখকের শেষ কথাঃ ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা সম্পর্কে শেষ মন্তব্য
ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা অবশ্যই সঠিক হওয়া প্রয়োজন একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্য অভ্যাস আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে সাথে সাথে প্রয়োজনীয় শক্তির যোগান ও দিয়ে থাকে। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য নির্দিষ্ট কিছু খাবার খাওয়া একেবারে ছেড়ে দিতে হবে। এছাড়া আপনার যখন খিদে পাবে।
তখন কাঁচা শাকসবজি, সালাদ, কালো চা, সূপ, পাতলা বাটার, লেবুর জল ইত্যাদি খেতে পারেন। এছাড়া চিনি, মধু, মিষ্টি, শুকনো ফল এগুলি এড়িয়ে চলুন। লবণ ডায়াবেটিকসের জন্য প্রধান দায়ী এগুলু। আপনি যে কোন ফল বা সবজি থেকে আপনি যথেষ্ট লবণ গ্রহণ করে থাকেন তাই যতটা সম্ভব লবণ কম খাওয়ার চেষ্টা করুন।
আশা করছি আপনি ডায়াবেটিস রোগীদের খাদ্যতালিকা কেমন হবে সেই সম্পর্কে বুঝতে পেরেছেন। সুস্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সম্পর্কিত এমন আরও পোস্ট পরতে ভিজিট করুন আমাদের হোমপেজে ধন্যবাদ।
অমৃতা ব্লগারের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url